Thursday, June 1, 2023
Homeঅ্যাশেজের আগে অবসরে চলে গেলেন ইংল্যান্ডের সফলতম পেসার, থেমে গেল ১৯ বছরের...

অ্যাশেজের আগে অবসরে চলে গেলেন ইংল্যান্ডের সফলতম পেসার, থেমে গেল ১৯ বছরের গৌরবময় পথচলা।

নতুন মৌসুম এই এলো বলে, মাস দেড়েক পরই ছেলেদের অ্যাশেজের পাশাপাশি চলবে মেয়েদের অ্যাশেজ। সেখানে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের বড় ভরসা থাকবেন ক্যাথেরিন সিভার-ব্রান্ট। এমনই ছিল সম্ভাব্য চিত্রনাট্য। কিন্তু তা বদলে গেল আচমকাই। প্রায় ১৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন ইংল্যান্ডের সফলতম এই পেসার।

৩৭ বছর বয়সী পেসার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন শুক্রবার। গত ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যাওয়া ম্যাচটিই হয়ে রইল ২৬৭ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।

টেস্ট থেকে অবশ্য আগেই বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। তবে মেয়েদের ক্রিকেটে সীমিত ওভারকেও রাখা হয় অ্যাশেজের আওতায়। এবারের অ্যাশেজে যেমন এক টেস্টের সঙ্গে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিনটি করে। কিন্তু সিভার-ব্রান্ট থাকবেন না এই লড়াইয়ে। বিশেষ করে, টি-টোয়েন্টিতে তার থাকার কথা ছিল নিশ্চিতভাবেই।

ইয়র্কশায়ারের অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ ক্রিকেটে রাঙিয়ে নজর কেড়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়টায় তার ওজন ছিল অনেক বেশি। পরে ক্রিকেট থেকে বিরতি নিয়ে ঘাম ঝরিয়ে ওজন কমিয়ে ফিট হয়ে আবার ফেরেন ক্রিকেটে। ১৯ বছর বয়সে তার টেস্ট অভিষেক হয়ে যায় ২০০৪ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। পরের বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২ টেস্টে নেন ১৪ উইকেট। তার নৈপূন্যে ৪২ বছর পর অ্যাশেজ জিততে পারে ইংল্যান্ড।

ক্রমেই তিন সংস্করণে হয়ে ওঠেন দলের পেস আক্রমণের মূল অস্ত্র। একটা সময় নিজেকে নিয়ে যান দেশের হয়ে উইকেট শিকারের চূড়ায়। ১৪১ ওয়ানডেতে ১৭০ উইকেট তার, ১১২ টি-টোয়েন্টিতে ১১৪টি। দুই সংস্করণেই দেশের সর্বোচ্চ উইকেট তার। ১৪ টেস্টে তার শিকার ৫১ উইকেট, দেশের হয়ে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। সবশেষ টেস্টেও গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যানবেরায় তার শিকার ছিল ৮ উইকেট।

সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ৩৩৫ উইকেটের ধারেকাছে নেই ইংল্যান্ডের আর কোনো বোলার।

দলীয় সাফল্যেও যথেষ্ট সমৃদ্ধ তার ক্যারিয়ার। দুটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তিনি জিতেছেন। অ্যাশেজ জিততে পেরেছেন চারবার।

অবসরের ঘোষণা তৃপ্তি নিয়ে সিভার-ব্রান্ট বললেন, তার অর্জন ছাড়িয়ে গেছেন নিজের প্রত্যাশাকেও।

“১৯ বছর পর, আজকে আমি এখানে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার পথচলার এখানেই সমাপ্তি। একটা সময় মনে হচ্ছিল, এই সিদ্ধান্তে কখনোই পৌঁছতে পারব না। তবে শেষ পর্যন্ত পেরেছি এবং আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত এটি।”

“ক্যারিয়ারে যা করতে পেরেছি, তা করার কোনো স্বপ্ন বা আশা আমার কখনোই ছিল না। স্রেফ নিজের পরিবারকে গর্বিত করতে চেয়েছি। শেষ পর্যন্ত যা অর্জন করতে পেরেছি, তা এটিকে ছাড়িয়ে গেছে অনেক।”

ক্রিকেটের পথচলাতেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন জীবনসঙ্গী। সতীর্থ অলরাউন্ডার ন্যাট সিভারের সঙ্গে তার বাগদান হয় ২০১৯ সালে, দুজনে বিয়ে করেন গতবছর। বিয়ের পরও পরস্পরের নামকেও আপন করে নেন দুজন। ক্যাথেরিন ব্রান্টের নাম বদলে হয়ে যায় ক্যাথেরিন সিভার-ব্রান্ট, ন্যাট সিভারের নাম হয় ন্যাট সিভার-ব্রান্ট।

ক্রিকেটের পথেই ন্যাটকে পাওয়া জীবনের সেরা অর্জন, অবসরের পর বললেন ক্যাথেরিন সিভার-ব্রান্ট।

“অনেক কিছু নিয়েই কৃতজ্ঞতার অনেক কিছু আছে আমার। ক্রিকেট আমাকে জীবনকে লক্ষ্য দিয়েছে, জীবনকে অর্থপূর্ণ করার অনুভূতি দিয়েছে, নিরাপত্তা, অনেক সোনালি স্মৃতি ও সেরা সব বন্ধু দিয়েছে, যা বয়ে চলবে জীবনভর।”

“যত ট্রফি আর শিরোপা জয়ের লক্ষ্য ছিল আমার, সব পেয়েছি, তবে ন্যাটকে পেয়ে যে খুশি আমি পেয়েছি, জীবনের সেরা অর্জন তা।”

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো ইংল্যান্ডের আঞ্চলিক ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দিয়েছেন তিনি। তবে খেলে যাবেন দা হান্ড্রেড ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments